কুলাউড়ায় রাউৎগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন


নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়ায় রাউৎগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার ১৯ এপ্রিল সকালে রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মাস্টার শরাফত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় উৎসবের আমেজ দেখা দেয় নেতাকর্মীদের মাঝে।

হাতির বহর ও ব্যান্ড পার্টির মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় সম্মেলনের অতিথিদের। পরে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি সম্পাদকসহ অতিথিদের নিয়ে জাতীয়, দলীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান। পরিবেশন করা হয় দলীয় সংগীত। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে উৎসবমুখর পরিবেশে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে কাউন্সিলাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচিত করেন।

বিকেল ৩টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। রাউৎগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদে মো: হাবিবুর রহমান খয়াজ ১৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী মদরিছ খান পান ৯৭ ভোট, তৌফিক আহমদ চৌধুরী ৮৬ ভোট, এম এ করিম ৮০ ভোট, আব্দুর রব চৌধুরী ২১ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুল মোহিত চৌধুরী রিপন ২৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী মো. তাজুল ইসলাম পান ১০৩ ভোট, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জিবলু ৮৩ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এমদাদুল ইসলাম টিপু ১১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী শেখ গফুর আলী পান ১১৬ ভোট, সাহেল আহমদ সেলিম ১০৮ ভোট ও সুয়েজ আহমদ ৮৫ ভোট। মোট কাউন্সিলার ছিলেন ৪৫৯ জন, কাস্টিং হয় ৪৪০। সভাপতি পদে ৪টি, সম্পাদক পদে ১৪টি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বাতিল হয় ১৩ টি ভোট। 

কাউন্সিলে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষক পারভেজ হোসেন ভুঁইয়া।  এর আগে দুপুরে প্রথম অধিবেশন সম্মেলন অনুষ্ঠানে রাউৎগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মো: হাসনু মিয়ার সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য, রাউৎগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক সুফিয়ান আহমদ ও সদস্য আব্দুল মুক্তাদির মনুর যৌথ সঞ্চালনায়সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। তিনি তাঁর বক্তব্য বলেন, অন্তবর্তী সরকারকে নির্বাচনের কথা বললে তারা সংস্কারের অজুহাত দেখান। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। বাংলাদেশে ১৯ দফার দাবিতে প্রথম সংস্কার শুরু করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এরপর বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে সংস্কারের দাবি তুলেন। ২০২৩ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফার দাবিতে সংস্কার প্রস্তাব করেন। বিএনপিই একমাত্র সংস্কারের প্রবর্তক। বিএনপিও চায় সংস্কার হোক তাই বলে কি জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবেনা। অন্তবর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না করলে শেখ হাসিনার মতোও তাদের অবস্থা হবে। জাতীয় দাবিকে নিয়ে জনগণের সাথে তামাশা করবেন না। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড. ইউনুছ আপনার সকল মামলা শেষ করলেন কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের অনেক মামলা শেষ হয়নি। এখনো অনেক নেতাকর্মী আদালতের বারান্দায় ঘুরাঘুরি করছেন। অচিরেই বিএনপি নেতাকর্মীদের সকল মামলা নিষ্পত্তি করুন। কাউন্সিল নিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগের সাথে যেসকল নেতাকর্মীরা সখ্যতা রেখেছেন এবং ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর যারা নেতা সাজার চেষ্টা করছেন সেকল নেতাকর্মীদের কমিটিতে রাখা যাবেনা। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে নেতৃত্ব বাছাইয়ে সর্তক থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়ে নেতা নির্বাচন করবেন যারা দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবেন। 

প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ওকুলাউড়া বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এড. আবেদ রাজা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মুকিত, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান, সদস্য শওকতুল ইসলাম শকু, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামাল, মৌলভীবাজার সদর বিএনপি নেতা তোফায়েল আহমদ, কুলাউড়া বিএনপির সদস্য জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, শামীম আহমদ চৌধুরী, বদরুজ্জামান সজল, ময়নুল হক বকুল, আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, আখদ্দস আলী মাস্টার, আব্দুল মুক্তাদির মুক্তার, ডা. তারু খান, হারুন মিয়া। বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের আহবায়ক জুবের আহমদ খান, যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম ইমন, রাউৎগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য কয়েছ আহমদ ও জুনেদ আহমদ, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাইফুর রহমান, কুলাউড়া সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মৌসুম সরকার, রাউৎগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এম ফয়েজ আলী, সভাপতি জসিম আহমদ, জেলা ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মইনুল ইসলাম চৌধুরী সামাদ, ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক খালেদুর রহমান, জিয়া পরিষদ কুলাউড়ার সভাপতি হিরো আলম, পর্তুগাল প্রবাসী যুবদল নেতা কাওসার আহমদ প্রমুখ। এসময় উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post