নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়ায় বৈষম্য বিরোধীদের উপর হামলার ঘটনায় আরেকটি বিস্ফোরক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কুলাউড়া থানায় দায়েরকৃত মামলার (নং ১৭, তারিখ ১৫.০৩.২৫ইং) এজহারে পৌরসভার সাবেক মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদকে প্রধান আসামি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু ও সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম, টিলাগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক লোকমান মিয়াসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি আরও ১০০/১৫০ জনকে রাখা হয়েছে। ওই মামলার বাদী হলেন উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের রকিব আলীর ছেলে সাইদুর রহমান।
এর আগে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে কুলাউড়া থানায় বৈষম্যবিরোধী দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
টিলাগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক লোকমান হোসেনের উপর মিথ্যা ষড়যন্ত্র মূলক এবং জামাত শিবিরের নেতা কর্মীদের ব্যাক্তিগত আক্রোষ মেটাতে কুলাউড়া থানা পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এই মামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মৌলভীবাজার জেলা ছাত্র দলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সিদ্দিক হোসেন রুবেল । তিনি আরো বলেন কুলাউড়ার ভোটের মাঠে দক্ষিন লংলা একটি বিশাল ফ্যাক্ট তাই জামাতে ইসলামীর অনেক হেবিওয়েট প্রার্থী থাকা সত্বেও তারা আমার ইউনিয়নে প্রার্থীতা দিয়েছে কারন তারা ভালো করে জানে দক্ষিন লংলা হাতে রাখতে হলে তারা আমাকে আগে ঘায়েল করতে হবে এবং জামাতে ইসলামী প্রার্থীতা ঘোষনার পর পরই এই পুরো দক্ষিন লংলায় গায়েবী মামলা এবং সাধারন মানুষ হয়রানি শুরু হয়ে গেছে প্রতি দিন ই ধরপাকড় হচ্ছে এবং মামলা বানিজ্য হচ্ছে। সিদ্দিক হোসেন রুবেল অবিলম্বে যুবদল নেতা লোকমান হোসেনের মামলা প্রত্যারের জোর দাবি জানিয়েছেন এবং এর তিব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
টিলাগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক লোকমান মিয়ার নাম আসামির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। টিলাগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক মো. জামাল আহমদ তার ফেসবুক ওয়ালে লোকমান মিয়াকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইউনিয়ন যুবদলের পক্ষ থেকে তার নাম প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন।
তাছাড়া কুলাউড়া উপজেলা যুবদলের আহবায়ক জুবের আহমদ খান ও যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম ইমন জানান, ভাটেরায় এরকম ঘটনার সাথে আদৌ জড়িত থাকলে তার শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করলে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার উপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
গনমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম আপছার। তিনি বলেন, ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে। আসামিদের আটক করতে অভিযান চলছে ।
এদিকে থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামীলীগ সরকারের নির্যাতন, নিপিড়ন, লুটপাট ও চাকুরীতে বৈষম্যের কারণে কোটা সংস্কারের দাবীতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সারাদেশে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বিকেল ৩টায় উপজেলার ভাটেরা স্টেশন বাজারে সরকার পতনের একদফা দাবীতে আন্দোলনের জন্য ছাত্র জনতা জড়ো হন। এসময় মামলার এজহারে উল্লেখিত আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা শ’ দেড়শ লোক সাবেক মেয়র সিপার উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু ও সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলামসহ অন্যদের নির্দেশে আন্দোলনকারীদের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রাণে মারার উদ্যেশ্যে হাত পা ভেঙ্গে পঙ্গুত্ব করে এবং গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন। তাছাড়া আসামীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে আন্দোলনকারীদেরকে স্থান ত্যাগ করতে বলেন। অন্যতায় খুন করে লাশ গুম করার হুমকি এবং রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় আসামী করার হুমকি দেন বলেও এজহারে উল্লেখ করা হয়।
তাছাড়া ৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টায় উল্লেখিত আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জন আসামি মোটরসাইকেল সহকারে ভাটেরা স্টেশন বাজারে শোডাউন দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়।