নিউজ ডেস্কঃ নারী চা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে তাদের নেতৃত্বের বিকাশের লক্ষ্যে গোল টেবিল বৈঠক করেছে এথনিক কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (একডো)।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও অক্সফামের অর্থায়নে এই বৈঠকে চা বাগানের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার চিত্র তুলে ধরা হয়।
'লিডারশিপ ডেভলপমেন্ট অফ টি লেবার ওমেন ওয়ার্কার অন দেয়ার রাইটস' শীর্ষক বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খুশনূর রোবায়েত। একডোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহের সভাপতিত্বে বৈঠকের মডারেটর ছিলেন অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক শাহিনা আক্তার, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, লাক্কাতুরা চা বাগানের এসিসেন্ট ম্যানেজার নূর মোহাম্মাদ ফারুকি সিয়াম।
বৈঠকের শুরুতেই সিলেটের চা বাগানের চিত্র তুলে ধরেন একডোর প্রকল্প সমন্নয়ক মোমতাহিনুর রহমান চৌধুরী।
তিনি জানান সিলেটের দলদলি চা বাগান, কেওয়াছড়া চা বাগান, হিলুয়াছড়া চা বাগানে একডো একটি জরিপ করে। ওই জরিপে দেখা যায় সিলেটের এই তিনটি চা বাগানে ৮৯০ পরিবার আছে। জনসংখ্যা আছে ৫হাজার ৬০০ জন। এরমধ্যে নারী শ্রমিক আছেন ১৫০৯ জন। এই তিন চা বাগানের ৪২% শিশু স্কুলে যাচ্ছে না। ৩৩% শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করছে। এবং ৩ % শিক্ষার্থী মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। চা বাগানের ৮২ % চা শ্রমিক বিশুদ্ধ পানির সুবিধা পান না।
বৈঠকে কথা বলেন বেশ কয়েকজন চা শ্রমিক। তারা সবাই এই জরিপের সত্যতা নিশ্চিত করেন। চা শ্রমিক সুমি নায়েক বলেন, এই তিন চা বাগানের জরিপে যে তথ্য পাওয়া গেছে এটা সিলেটের সব চা বাগানের চিত্র। চা বাগনে নারী শ্রমিকই বেশি। কিন্তু আমরা চিকিৎসা, স্যানিটেশনের কোনো সুবিধা পাই না। পর্যাপ্ত মজুরি না পাওয়ার কারণে অনেক নিম্নমানের এবং কম পরিমানের খাবার খেতে হয়। চা বাগানে নেই কোনো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাই আমাদের বাচ্চারা পড়ালেখা বিমুখ। আবার আমাদের এই সামর্থ নেই বাচ্চাদের বাগানের বাইরে লেখাপড়া করানোর।
চা শ্রমিক নেতা দিলীপ রঞ্জন কুর্মী বলেন, চা বাগানের সব সমস্যা পাশে আরেকটি নতুন সমস্যা হল মাদকের সমস্যা। এই মাদকের সমস্যা থেকে আমাদের দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। এখন বহিরাগতরা এই মাদক নেওয়ার জন্য বাগানে ডুকে অরাজকতা করে।