কুলাউড়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুই মামলায় আসামি ১০৩


নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে। পৃথক দুটি মামলায় আাসামি করা হয়েছে ১০৩ জনকে। অজ্ঞাত আরো ৬০-৭০ জন আসামী করা হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেণু, সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সফি আহমদ সলমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ, ছয় ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে আসামী করে ২৪ আগস্ট শনিবার রাতে উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের কুদ্দুস মিয়া ওরফে কালা মিয়ার ছেলে পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা (নং-১২) দায়ের করেন।

মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের অরবিন্দু ঘোষ বিন্দু, শফিউল আলম শফি, সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম বদর, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক ফজলু, ব্রাহ্মণবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মো: মমদুদ হোসেন, কাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাফর আহমদ গিলমান, ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম, কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ, হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো: আব্দুস শহীদ, সহ-সভাপতি শাহীন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম সবুজ, যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান বক্স, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মনি, কাদিপুর ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম মিঠু, কাদিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়ের মিয়া, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-অ্যাপায়ন বিষয়ক সম্পাদক সঞ্জয় পাশী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজুল ইসলাম তায়েফ, সহ-সভাপতি খাইরুল আলম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক আবু সায়হাম রুমেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মান্না, যুবলীগ নেতা উজ্জ্বল মিয়া, পরিবহন শ্রমিক নেতা শাহজাহান মিয়া, রাজুম আলী রাজুসহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মী।

অপর মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেণু ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র সিপার উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সম্পাদক ও যুবলীগের সম্পাদকসহ ২০ জন নেতাকর্মীর নামে মামলা (নং-১১) দায়ের করেন কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল ফাত্তাহ ফাহিম। অন্য আসামীরা হলেন উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আহমদ, সাধারণ-সম্পাদক প্রভাসক মইনুল ইসলাম সবুজ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এহসান আহমদ টিপু, ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজুল তায়েফ, সাধারণ সম্পাদক আবু সায়হাম রুমেল প্রমুখ।

মামলার বাদী পারভেজ মিয়া এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ১৮ জুলাই সকাল ১১টার পর পৌর শহরের মিলিপ্লাজার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে স্লোগান দিলে ওই সময় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীসহ তাঁর ওপর হামলা করে।

অপর মামলার বাদী আবুল ফাত্তাহ ফাহিম এজাহারে উল্লেখ করেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৮ জুলাই সকাল সাড়ে এগারোটায় কুলাউড়া পৌর শহরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে। এসময় সদ্য সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিপার উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র সহকারে মিছিল দিয়ে শিক্ষার্থীদের মিছিল ছত্রভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে রবিবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, দুটি মামলায় আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের ১০৩ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post