নিউজ ডেস্কঃ ত্রিপুরার পাঠকনন্দিত জনপ্রিয় স্রোত প্রকাশনার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লোকসংস্কৃতি উৎসব অনুষ্ঠিত হলো ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার। আগরতলা প্রেসক্লাবে লোকসংস্কৃতি উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ভারত ও বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি গবেষক ও লোকশিল্পীরা।
উৎসবে বিভিন্ন বিষয়ের অনুষ্ঠানসূচিতে ছিলো আলোচনা, বই প্রকাশ, বই বিনিময়, লোকসংগীত পরিবেশন, সম্মাননা প্রদান, নির্বাচিত কবিদের আঞ্চলিক কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, ধামাইল নৃত্য, ত্রিপুরী নৃত্য এবং শ্রুতি নাটক।
'লোকসংস্কৃতি আমাদের নাড়ীর স্পন্দন’ বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের সৈয়দা আঁখি হক, কবিতায় লোকজ ভাষা বিষয়ক আলোচনায় ত্রিপুরার অশোকানন্দ রায় বর্ধন, পতুল নাচ নিয়ে নিয়ে সাংবাদিক লোকমান হোসেন পলা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এম এইচ শাহ আলম, কবিতা পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আওয়াল, ত্রিপুরায় লোকসংস্কৃতির ধারাবাহিকতা নিয়ে আলোচনায় মন্টু দাস, ত্রিপুরায় কথা সাহিত্যে লোকজ বিষয় নিয়ে বিমল চক্রবর্তী এবং প্রতিষ্ঠানটির গতিধারা সম্পর্কে ও আগামী দিনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা করেন স্রোতের কর্ণধার কবি গোবিন্দ ধর।
লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন গীতশ্রী ভৌমিক, নন্দিতা বড়ুয়া, উৎপলা গোস্বামী মুখার্জী, চন্দ্রিমা বণিক, শুক্লা রানী দাস। মগভাষায় লোকসঙ্গীত পরিবেশনে ক্রাইরী মগচৌধুরী, মণিপুরী নৃত্য পরিবেশনে পুনম সিনহা এবং লেবাং বুমানি ও নবান্ন নৃত্যের কোলাজ পরিবেশন করেন কুমারঘাটের সুরাঞ্জলির শিল্পীরা। এছাড়া লোকশিল্পীরা ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করেন উৎসবে।
সুমনা দাশ পাটারীর সঞ্চালনায় লোকসংস্কৃতি উৎসবে আলোচনায় বক্তারা বলেন, লোকসংস্কৃতির একটি জরুরি অঙ্গ হলো লোকসংগীত। নির্বাচিত শব্দ এবং সুর দিয়ে খুব আকর্ষণীয় করে তোলা হয় চর্চাগুলি। বাংলা লোকসংগীতে বাউল, ভাটিয়ালি, দেহতত্ত্ব, মুর্শিদি ও মারফতি প্রথম শ্রেণির গান। এগুলির রচয়িতাও ব্যক্তিবিশেষ। এছাড়া কবিগান, লেটোগান, আলাপ গান, গম্ভীরা গান ইত্যাদি সমবেত কণ্ঠের গান। দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মিলে এসব গান পরিবেশন করে। কতগুলো গান আঞ্চলিক, আবার কতগুলো সর্বাঞ্চলীয়। আরো রয়েছে যেমন জারি গান, সারি গান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী পাগলা হাসানের গান। হাছন রাজার গানের পাশাপাশি তিনি পরিবেশন করেন বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, রাধারমণসহ, তাঁর স্বরচিত ও প্রচলিত গান।
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ ও উপমহাদেশের স্বনামধন্য লোকগবেষক সৈয়দা আঁখি হকের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটার মাধ্যমে লোকসংস্কৃতি উৎসব সমাপ্ত হয়।