নিউজ ডেস্কঃ আজ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন লাগেজ ভ্যান। রেলের আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নিয়ে চীন থেকে ১২৫টি রেফ্রিজারেটর ও নন-রেফ্রিজারেটর লাগেজ ভ্যান কিনেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের ১৬টি ট্রেনে ১৬টি লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হবে।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দেশের প্রধান ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও অন্যান্য মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে আন্তঃনগর ট্রেনে আধুনিক লাগেজ ভ্যান সংযোজনের উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
কোন কোন ট্রেনে এই লাগেজ ভ্যান যুক্ত হবে এবং প্রারম্ভিক ও গন্ত্যবের স্টেশন ছাড়া কোন কোন স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং ও আনলোডিং করা যাবে তা জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ের তথ্যমতে লাগেজ ভ্যান সুবিধা পাওয়া যেসব ট্রেন ও যেসব স্টেশন থেকে—
১. ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটের পারাবত এক্সপ্রেসে (৭০৯/৭১০) শুধুমাত্র চট্টগ্রাম ও সিলেট স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
২. সিলেট-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে (৭২০/৭২৩) শুধুমাত্র চট্টগ্রাম ও সিলেট স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
৩. চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে (৭১৯/৭২৪) শুধুমাত্র চট্টগ্রাম, শ্রীমঙ্গল ও সিলেট স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
৪. চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটের বিজয় এক্সপ্রেসে (৭৮৫/৭৮৬) শুধুমাত্র চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, গৌ. ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব বাজার স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
৫. ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটের ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসে (৭৪৩/৭৪৪) শুধুমাত্র ঢাকা, মেলান্দহ বাজার, ইসলামপুর বাজার, দেওয়ানগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
৬. ঢাকা-ভূয়াপুর-ঢাকা রুটের জামালপুর এক্সপ্রেসে (৭৯৯/৮০০) শুধুমাত্র ঢাকা, তারাকান্দি, সরিষাবাড়ী, জামালপুর স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
৭. ঢাকা-কিশোরগঞ্জ-ঢাকা রুটের কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসে (৭৮১/৭৮২) শুধুমাত্র ঢাকা, নরসিংদী, ভৈরব বাজার, কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
৮. ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটের হাওর এক্সপ্রেসে (৭৭৭/৭৭৮) শুধুমাত্র ঢাকা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, মোহনগঞ্জ স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে
৯. চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের মহানগর এক্সপ্রেসে (৭২১/৭২২) শুধুমাত্র চট্টগ্রাম, লাকসাম, কুমিল্লা ও ঢাকা স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
১০. চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের চট্টলা এক্সপ্রেসে (৮০১/৮০২) শুধুমাত্র চট্টগ্রাম, ফেনী, লাকসাম, ভৈরব বাজার, নরসিংদী ও ঢাকা স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
১১. ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটের জয়ন্তিকা ও উপবন এক্সপ্রেসে (৭১৭/৭৪০) শুধুমাত্র ঢাকা, শায়েস্তাগঞ্জ ও সিলেট স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
১২. সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটের জয়ন্তীকা ও উপবন এক্সপ্রেসে (৭১৮/৭৩৯) শুধুমাত্র সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও ঢাকা স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
১৩. ঢাকা-লালমনিরহাট-ঢাকা রুটের লালমনি এক্সপ্রেসে (৭৫১/৭৫২) শুধুমাত্র ঢাকা, সান্তাহার, বগুড়া, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
১৪. ঢাকা-রংপুর-ঢাকা রুটের রংপুর এক্সপ্রেসে (৭৭১/৭৭২) শুধুমাত্র ঢাকা, সান্তাহার, বগুড়া, গাইবান্ধা ও রংপুর স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে;
১৫. ঢাকা-কুড়িগ্রাম-ঢাকা রুটের কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে (৭৯৭/৭৯৮) শুধুমাত্র ঢাকা, সান্তাহার, পার্বতীপুর, রংপুর ও কুড়িগ্রাম স্টেশন থেকে মালামাল লোডিং বা আনলোডিং করা যাবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলের আয়ের অন্যতম খাত পণ্য পরিবহন। আর এটি করা হয় লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে। বর্তমানে রেলওয়েতে ৪১টি মিটারগেজ ও ১০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান আছে। সেগুলোর বেশির ভাগের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। ফলে পণ্য পরিবহন থেকে যথেষ্ট আয় করতে পারছে না রেলওয়ে। এখন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন করে অত্যাধুনিক ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এর আগে সরকার ২০১৮ সালের ২৬ জুন পণ্য পরিবহন ও যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে আধুনিক, নিরাপদ ও গুণগত মানসম্মত রোলিং বহরে স্টক যুক্ত করার লক্ষ্যে ৩ হাজার ৬০২ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের (রোলিং স্টক সংগ্রহ) অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২ হাজার ৮৩৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণ দেবে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত হলেও পরে তা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।