বরকত বাড়ানোর ‘ফু’র নামে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিল প্রবাসীর স্ত্রীর টাকা


নিউজ ডেস্কঃ বড়লেখায় টাকায় বরকত বাড়ানোর ‘ফু’ দেওয়ার নামে কাতার প্রাবসীর স্ত্রীর ৭৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র।

সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বড়লেখা পৌরশহরে অভিনব কায়দায় প্রতারণার এই ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

এ ঘটনায় ভোক্তভোগী ছাবিয়া বেগম ওইদিন বিকেলে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি উপজেলার সুজানগর ইউপির বড়থল গ্রামের কাতার প্রবাসী ছুয়াব আলীর স্ত্রী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ছাবিয়া বেগম সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের সময় পূবালী ব্যাংক বড়লেখা শাখা থেকে স্বামীর পাঠানো ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।

ব্যাংক থেকে নেমে বড়লেখা পৌরশহরের লক্ষ্মী মিষ্টি ঘরের সামনে পৌঁছালে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি হঠাৎ ছাবিয়া বেগমের মাথা ও মুখে হাত বুলিয়ে বলেন, আমি নামাজ পড়তে আসি।

তখন তিনি ওই ব্যক্তির পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেলে এক যুবক তার পথ আগলে বলে, ওই বাবা কি বলেছেন? উনি অনেক বড় পীর, উনার কথা শুনলেন না কেন। পথ আগলে ওই যুবক ছাবিয়া বেগমকে কথিত পীরের কাছে নিয়ে যায়।

এসময় ছাবিয়া বেগম দেখতে পান ৫০/৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি মধ্যবয়স্ক আরো এক ব্যক্তির টাকা হাতে নিয়ে ফু’দিয়ে ফেরত দিচ্ছেন।

তখন ওই ব্যক্তি ছাবিয়াকে বলেন (কথিত পীর), তোমার নিকট টাকা আছে। টাকাগুলা দেও। টাকা পড়ে (ফু) দিই। টাকার বরকত হবে।

তখন তিনি ব্যাংক থেকে তুলে ব্যাগে রাখা ১ হাজার টাকার ২৩টি নোট ও ৫০০ টাকার ১০০টি নোটে ৭৩ হাজার টাকা ওই ব্যক্তির হাতে দেন। দুই হাজার টাকা ছোট নোট হওয়ায় সে ওইগুলো নেয়নি।

মুহুর্তেই ওই ব্যক্তি টাকাগুলো হাতিয়ে ছাবিয়ার ব্যানেটি ব্যাগে দিয়েছে বলে পেছন দিকে না তাকিয়ে দ্রুত চলে যেতে বলে। সামান্য এগিয়ে যাওয়ার পর ছাবিয়া বেগম দেখতে পান তার ব্যানেটি ব্যাগে টাকা নেই।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পরা ছাবিয়া বেগমের পাশে হলুদ টিশার্ট পরা মূল প্রতারকের সহযোগী এক যুবক দাঁড়িয়ে আছে।

ডানপাশে পাঞ্জাবি পরা মূলপ্রতারক টাকায় বরকত বাড়ানোর ফু’দিতে ওই নারীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

ভোক্তভোগী ছাবিয়া বেগমের ছেলে আব্দুজ আজিজ মঙ্গলবার দুপুরে জানান, ‘আমার আম্মা পুবালী ব্যাংক বড়লেখা শাখা থেকে আব্বার পাঠানো ৭৫ হাজার টাকা তুলে নিচে নামতেই প্রতারকরা উনার কাছ থেকে ৭৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অবশিষ্ট ২ হাজার টাকা ছোট নোট হওয়ায় সেগুলোতে ‘ফু’ লাগবেনা বলে নেয়নি। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আজ দুপুরেও থানায় গিয়ে আম্মা জবানবন্দি দিয়েছেন।

বড়লেখা থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনাটি তদন্তে নেমেছে। প্রতারক চক্রকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post