কুলাউড়ার দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় আত্নগোপনে থাকা ১৭ জঙ্গি জনতার হাতে আটক



স্টাফ রিপোর্টার:মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় আত্মগোপনে থাকা ১৭ জঙ্গি জনতার হাতে আটক হয়েছে।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় কাউন্টার টেরিরিজম প্রধান প্রেসব্রিফিং করে বলেন আটককৃতদের মধ্যে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ১৪ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে তাদেরকে আছকরাবাদ বাজার সংলগ্ন সিএনজি গাড়ি স্ট্যান্ড থেকে মৌলভীবাজার  ও ফুলতলা যাওয়ার পথে আটক করে গাড়ি চালক ও স্থানীয় জনতা।



সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক লকুছ মিয়া, আব্দুল কুদ্দুছ ও রব উল্লাহ জানান, সকালের দিকে তাদের সিএনজি স্ট্যান্ডে কয়েকজন অপরিচিত লোক খালি পায়ে কর্দমাক্ত অবস্থায় একজন শারিরিক প্রতিবন্ধী লোককে মাচায় করে নিয়ে আসে।

তারা পর্যটক ভেবে তাদের গন্তব্য জানতে চায়। তখন জঙ্গিরা ওই প্রতিবন্ধী লোক গাছ থেকে পড়ে কোমর ভেঙ্গে অসুস্থ তাকে আশপাশে কোনো ডাক্তার দেখাবে বলে চালকদের সহযোগিতা চায়।

এরপর তারা ওই শারিরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ ৩ জন একটি সিএনজি গাড়িতে উঠে রবিবার বাজার এলাকায় চলে যায়। এর পর পরই তাদের পেছনে আসে ৩টি অটোরিকশায় আরও ১৪ জন। তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে চালক ও স্থানীয় জনতা চ্যালেঞ্জ করে।

সিএনজি চালিত ৩টি অটোরিকশা যোগে ওই এলাকা ত্যাগের সময় জনতা তাদের আটক করে। একই সময়ে রবিরবাজার এলাকায় চলে যাওয়া ১টি অটোরিকশায় জঙ্গি দলের ইমাম মাহমুদ সহ ৩ জনকে আটক করে।



পরে ওই ১৭ জনকে কর্মধা ইউনিয়ন কার্যালয়ের একটি কক্ষে সকাল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। তাদের বয়স ২৫-৫০ এর ভেতরে হবে।

ওই সময় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের পুরো এলাকা ঘিরে রাখে।

তখন ইউনিয়ন পরিষদের বাহিরে উৎসুক জনতার ভীড় ছিলো লক্ষণীয়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের বলা হয় ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট আসার পর তারা এবিষয়ে কথা বলবেন।

দিনভর গণমাধ্যমকর্মীরা ইউনিয়ন পরিষদের বাহিরে অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে পৌছায় কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট।

জানা যায় নতুন জঙ্গী সংগঠন ইমাম মাহমুদের কাফেলার টিম প্রধান জনতার হাতে আটককৃত এই  ১৭ জঙ্গীর মধ্যে রয়েছেন।

১৭ জঙ্গি জনতার হাতে আটকের বিষয়টি কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গণমাধ্যমকর্মীদের  নিশ্চিত করেন। এর আগে ১২ আগস্ট একই ইউনিয়নের টাট্রিউলী গ্রাম থেকে ১০ জঙ্গি গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট। এসময় ৩ শিশু  উদ্ধার করা  হয়।

দিনভর অপেক্ষার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাউন্টার টেরিরিজম প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদে এসে পৌঁছান। শুরু থেকেই সার্বিক সহযোগিতা করে কুলাউড়া ও মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ।

রাত সাড়ে ৮ টার দিকে প্রেসব্রিফিংয়ে কাউন্টার টেরিরিজম প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন আটককৃতদের মধ্যে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন।

১৭ জন দূর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে সমতলে আসলে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় আটক হয়। আমার ওই এলাকায় আরও অভিযান করবো। এরপরে বিস্তারিত বলা যাবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজােরর পুলিশ সুপার  মো: মনজুর রহমান পিপিএম (বার) ও কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের সহকারী পুলিশ কমিশনার সফিক, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালেক সহ পুলিশের উর্ধ্বোতন কর্মকর্তারা।

প্রেসব্রিফিংয়ের পূর্বে কঠোর বেষ্ঠনীর মধ্যে ৩টি মাক্রোবাসে করে জনতার হাতে আটক ১৭ জনকে পুলিশ হেফাজতে অন্যত্র নেওয়া হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post