শ্রীমঙ্গলে লোকালয় থেকে বিপন্ন শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার



নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় লোকালয় থেকে একটি বিষধর শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার শহরতলির পূর্বাশা এলাকার একটি বাড়ি থেকে বন বিভাগের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সাপটি উদ্ধার করে বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। পরে সাপটিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করে বন বিভাগ।

মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, সাপটিকে উদ্ধারের পর সুস্থ থাকায় তারা আজ দুপুরেই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করে দিয়েছেন

বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বলেন, আজ দুপুরে তারা পূর্বাশা এলাকার একটি বাড়িতে সাপ ঢোকার খবর পান। তিনি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখেন, সেটি শঙ্খিনী সাপ। পরে বন বিভাগের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সাপটি উদ্ধার করেন। সাপটি সুস্থ আছে। উদ্ধারের পর সাপটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সজল দেব আরও বলেন, শঙ্খিনী সাপের বৈজ্ঞানিক নাম বাংগারুস ফ্যাসিয়াটাস (Bungarus fasciatus)। এটি বিষধর সাপ। সাপটির দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ৬ ফুট ১১ ইঞ্চি হতে পারে। গায়ে কালোর মধ্যে হলুদ ডোরাকাটার কারণে সহজেই সাপটি চেনা যায়। সাধারণত মানুষ দেখলে সাপটি পালানোর চেষ্টা করে। মাথা ঝোপ বা মাটির মধ্যে লুকিয়ে রাখে। তখন সাপটির ভোঁতা লেজটিকে অনেকে মাথা ভেবে ভুল করেন। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৪ থেকে ১৪টি ডিম দেয় স্ত্রী সাপ। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে প্রায় ৬১ দিন সময় লাগে।

বন্য প্রাণী নিয়ে কাজ করা সজল দেবের ভাষ্য, সাপটি নিশাচর। এরা ইঁদুরের গর্ত, ইটের স্তূপ এবং উইয়ের ঢিবিতে থাকতে পছন্দ করে। এ সাপ যে এলাকায় থাকে, সেখানে অন্য জাতের সাপ সাধারণত থাকে না। কারণ, অন্য প্রজাতির সাপ এগুলোর প্রিয় খাদ্য। শঙ্খিনী সাপ কেউটে, গোখরাসহ অন্যান্য বিষধর সাপকে খেয়ে ফেলে। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন সাপটিকে বাংলাদেশে বিপন্ন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

সজল দেব বলেন, একসময় মানুষের বাসাবাড়িতে সাপ মারার জন্য হাতিয়ার রাখা হতো। সাপ দেখলেই মানুষ মেরে ফেলত। এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ সাপ দেখলে তাদের বা বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেন। তারা সেটি উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post