নিজ এলাকায় সংবর্ধিত হলেন কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক রাধাবতী



কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার নিজ ইউনিয়নে সংবর্ধিত হলেন দেশে প্রথমবারের মতো কলাগাছের তন্তু থেকে সুতা তৈরি করে মণিপুরি শাড়ির উদ্ভাবক রাধাবতী দেবী। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে কলাগাছ থেকে কলাবতী শাড়ি উদ্ভাবক রাধাবতী দেবীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আবদাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম।

অনুষ্ঠানে কলাবতী শাড়ি উদ্ভাবক রাধাবতী দেবীকে আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় মৈরাপাইবী মহিলা সমিতির সভাপনেত্রী সৌদামিনী শর্মাসহ মণিপুরি তাঁতিরা উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনার পূর্বে এক আনন্দ র‌্যালি বের হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কমলগঞ্জের ভানুবিল মাঝেরগাঁও গ্রামের কৃতি সন্তান মণিপুরি তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী চ্যালেঞ্জ নিয়ে ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে কলাগাছের তন্তু থেকে প্রথমবারের মতো শাড়িটি তৈরি করে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হতে তুলে দেয়া হয়। এজন্য রাধাবতী দেবী মণিপুরি সমাজ ও কমলগঞ্জ তথা মৌলভীবাজার জেলাবাসী গর্বিত ও আনন্দিত। মণিপুরি সমাজের ঘরে ঘরে এখন আনন্দের বন্যা বইছে।

মণিপুরি তাঁতশিল্পী ও কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক রাধাবতী দেবী জানান, বান্দরবান জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া দিয়ে শাড়িটি বুনেছি। আমার এলাকায় যারা মণিপুরি শাড়ি বুনেন, সবাই আমাকে বলেছিলেন এ দায়িত্ব না নিতে। তারপরও চ্যালেঞ্জ নিয়ে সফল হই। ১৯৭৫ সাল থেকেই সুতা দিয়ে শাড়িসহ নানা কিছু তৈরি করেছি। কিন্তু কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি ছিল আমার কাছে একেবারেই নতুন। দীর্ঘ ১৫ দিনের চেষ্টায় আরো তিনজন সহযোগীকে নিয়ে তাঁতে বসে তৈরি করে ফেলি জামদানি ডিজাইনের কলাগাছের সুতা দিয়ে তৈরি শাড়ি। সাধারণ সুতায় ৫০০ গ্রাম দিয়ে যেখানে একটি শাড়ি তৈরি করা যায়, সেখানে কলাগাছের সুতায় শাড়ি তৈরি করতে লাগে প্রায় এক কেজি। কলাগাছের সুতা তৈরিতে গবেষণা করে ভালো সুতা তৈরি করতে পারলে আরো ভালো মানের শাড়ি তৈরি করা যাবে। তিনি আরো বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কলাবতী শাড়িটি বাজারজাত করা যাবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post