জাকির আহমদ চৌধুরীঃ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ইঙ্গিতের পর ফেঞ্চুগঞ্জে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভরসা নেই তাদের। তাই বিএনপি নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে তিন নতুন মুখে ভরসা ফেঞ্চুগঞ্জ আওয়ামী লীগের। পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়নে জীবনে প্রথমবারের মতো নৌকা পাওয়ার পর তাদের আনন্দের কমতি নেই। দল তাঁদের ওপর যে আস্থা রেখেছে, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে প্রচার-প্রচারণা করছেন নৌকার মাঝিরা। আর বাকি দু’জনই বিগত ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হলেও বিজয়ের হাসি হাসতে পারেননি। এরপরও দল ভরসা করেছে তাঁদের ওপর। তাদের হাতেই তুলে দিয়েছে নৌকা। পাঁচটি ইউনিয়নে নৌকার মাঝিরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন তাঁরা।
১নং ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তৈয়বুর রহমান শাহিন, ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়নে জুবেদ আহমদ চৌধুরী শিপু, ৩নং ঘিলাছড়া ইউনিয়নে সাইফুল ইসলাম, ৪নং উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নে লুদু মিয়া ও ৫নং উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নে জুনেদ আহমদ। শাহিন, সাইফুল ও জুনেদ প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। শিপু ও লুদু গত ২০১৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ওই দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ের মালা গলায় পড়তে পারেননি।
অন্যদিকে ৪নং উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছেন আহমেদ জিলু। উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহŸায়ক তিনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীর্ষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জিলু। এবারের নির্বাচনে দল অংশগ্রহণ না করলেও স্বতন্ত্র প্রার্তী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু। ৫নং উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোহাম্মদ এমরান উদ্দিন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। গেলো ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীর্ষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এমরান। এবারের নির্বাচনে দল অংশগ্রহণ না করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এমরান। একই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য আবজাল হোসাইন। তরুণ হিসেবে নির্বাচনী মাঠে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি।
এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে আসলেও কৌশলী ভূমিকায় রয়েছে জামায়াত। ২নং মাইজগাঁও এবং ৩নং ঘিলাছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তাদের প্রার্থী রয়েছে। ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জামায়াত নেতা ইমরান আহমদ চৌধুরী। গতবারের ইউনিয়ন নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। ৩নং ঘিলাছড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রুকুনুজ্জামান চৌধুরী। তিনি উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি। একই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জামায়াত নেতা আমিনুর রহমান জুয়েল। ওই দুটি ইউনিয়নে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা বেশি থাকায় চেয়ারম্যান পদে তাদের সমর্থিত প্রার্থী রয়েছে।
আগামী ১৬ মার্চ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি। উপজেলায় মোট ভোটার ৮১ হাজার ৭৯৫ জন।