নিউজ ডেস্কঃ ৩০০ টাকা মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকরা কুলাউয়া ষ্টেশনে প্রবেশের আগে স্কুল চৌমুহনা এলাকায় সিলেটগামী আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পযর্ন্ত আটকে রাখে। এসময় শ্রমিকরা রেল লাইনের উপর শুয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে রেললাইন থেকে তুলে দেয়।
২৩ আগস্ট মঙ্গলবার দূপুরে কুলউড়া শহরের নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় চৌমুহনীতে সড়কপথ অবরোধ করে শ্রমিকরা এ আন্দোলন করেন। পরে বিকেল ৪টার দিকে ওই এলাকায় আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন ঘন্টাখানেক আটকিয়ে রাখেন শ্রমিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সড়ক ও রেলপথের যাত্রীরা।
জানা যায়, উপজেলার কালোটি, রাঙ্গিছড়া, রাজানগরসহ কয়েকটি বাগানের সহস্রাধিক শ্রমিকরা অবরোধ করেন। এ সময় চা শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: মেহেদি হাসান, কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার ওসি মো: আব্দুস ছালেক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
৩০০ বৃদ্ধির দাবীতে আজ ১৫তম দিনে মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানের মধ্যে বেশ কিছু বাগানে চলছে ধর্মঘট। বেশ কয়েকটি চা বাগানে শ্রমিকরা দুপুর পাতা উত্তোলন করেন।
সকাল সাড়ে ১১ মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া চা বাগানে সাধারণ শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন তাদের মজুরীর বিষয়ে। তিনি তাদের আশ্বাস দেন মজুরী বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দূর্গাপূজার পূর্বে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী ঘোষনা দেবেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সহ অন্যান্যরা।
এসময় উপস্থিত শ্রমিকরা জেলা প্রশাসককে আশ্বাস দেন কাজে যোগ দেয়ার বিষয়ে। এর আধাঘন্টা পর ভাড়াউড়া চা বাগানে শ্রমিকরা নামেন পাতা উত্তোলন করতে।
এদিকে বাংলাদেশীয় চা সংসদ, সিলেট অঞ্চল এর চেয়ারম্যান জি এম শিবলি জানান, শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারনে প্রতিদিন চা শিল্পের লোকশান হচ্ছে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করছের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিবেন।
চা শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির বিষয়ে প্রথম দফা ঢাকায় বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তর কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠক, পরে শ্রীমঙ্গল শ্রম দপ্তরে এবং সর্বশেষ রোববার মধ্যরাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকে ৮ জন শ্রমিক নেতৃবৃন্ধ মেনে নিয়ে প্রশাসনের সাথে যৌথ স্বাক্ষর করে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন। পরে তারা সাধারণ শ্রমিকের চাপে তা প্রত্যাখান করেন। সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ৮ শ্রমিক নেতা পরে তাদের মুঠোফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য গত ৯ আগষ্ট থেকে শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরীর দাবীতে ধর্মঘটে নামেন। এর পর ১৩ আগষ্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস চা শ্রমিকরা মানববন্ধন, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও মহা সড়ক অবরোধ করে ধর্মঘট পালন করেন। ১৪ ও ১৫ আগষ্ট ২ দিন স্থগিত থাকার পর এ পর্যন্ত পূর্ণদিবস ধর্মঘট পালন করে আসছে চা শ্রমিকরা।