স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগে শনিবার আদালত সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ’র বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চেšধুরী, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারসহ জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার আদালতের মামলার বিবরণ ও বিভিন্ন থানার মূলতবী পরোয়ানার বিবরণ তুলে ধরেন।
সাক্ষী মনিটরিং সেল স্থাপনের পর হতে আদালতে সাক্ষীর উপস্থিতির হার ইতিপূর্বের চেয়ে ২৫/৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মৌলভীবাজার জেলার অধীনস্থ হাসপাতালগুলো হতে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেডিকেল সার্টিফিকেট ও পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে প্রাপ্ত হওয়ায় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ উপস্থিত সকলে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তবে, সি.আই.ডিসহ অন্যান্য কিছু সংস্থায় অনেক মামলায় দীর্ঘদিন যাবত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল না করায় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ আগত বক্তাগণ এবং পরিবারিক মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা ও লেভি ওয়ারেন্ট দ্রুততার সাথে তামিল না হওয়ায় সহকারী জজ মোহাম্মদ আলমগীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় তাঁর বক্তব্যে দীর্ঘদিন যাবত তদন্তাধীন থাকা মামলাসমূহের গুরুত্বের সাথে দ্রত তদন্ত কার্য সমাপ্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের এবং পারিবারিক মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা ও লেভি ওয়ারেন্টসহ সকল পরোয়ানাসহ দ্রুততার সাথে তামিলের জন্য থানার অফিসার ইনচার্জগণকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আহমদ ফয়সাল জামান তাঁদের বক্তব্যে মূলতবীকৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট, পোর্স্ট মোর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট এবং ধর্ষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা প্রতিবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ কিংবা আদালতে দাখিলের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইকবাল আদালতে আগত সাক্ষী ও বিচারপ্রার্থী জনগণের নিরাপত্তা বিধানসহ আদালত প্রাঙ্গণের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং জেলার বিভিন্ন থানায় তদন্তাধীন থাকা মামলার তদন্ত কার্য দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করত: তাদের নিরাপত্তা বিধান, গ্রেফতারের পর আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করার আহবান জানান।
পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার, নিষ্পত্তির নিমিত্তে পি.আরমূলে জব্দ থানা মালখানায় থাকা আলামতের তালিকা তৈরি করে আদালতে প্রেরণ ও আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য বিচারক ও থানার অফিসার ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরো বলেন, ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে বিচার প্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করার আহবান জানান।