৫ দশক পরে দাবি পুরণ হচ্ছে, সেতু পাচ্ছেন চার গ্রামের মানুষ

 


এস আলম সুমন: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৪ গ্রামের সহস্রাধিক মানুষকে। ৫ দশক ধরে বাঁশের সাঁকো মেরামত করে চলাচল করতে হয় ওই এলাকার স্থানীয় মানুষদের। উপজেলার জয়চ-ী ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত গুগালীছড়া নদীর ওপর একটি পাকা সেতু স্থাপন দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো ওই ৪ গ্রামের মানুষের। সেই দাবি শুধু আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ ছিলো এতদিন।  অবশেষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ওই এলাকায় একটি পাকা সেতু অনুমোদন হয়েছে সম্প্রতি। এতে ৫ দশকের দাবি পূরণ হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি এসেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত গুগালীছড়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে গত বছর চাহিদা দেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী। সম্প্রতি আবুতালিবপুর- মিঠুপুর এলাকায় গুগালীছড়া নদীর ওপর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ৮৫ লাখ ২৪ হাজার ৩৪০ টাকা ব্যায়ে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি সেতু অনুমোদন দেন। সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক আহমদ, দেওয়ান খাঁ, রজব আলী, নিয়াজ আহমদ, আতাউর রহমান, ইমারন হোসেন জানান, মিঠুপুর, আবুতালিবপুর, বেগমানপুর ও নুরপুর এলাকার মানুষ গুগালীছড়া নদীর ওপর একটি পাঁকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন স্বাধীনতার পর থেকে। ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে এমপির কাছে একাধিকবার অনুরোধ করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু ৫০ বছর ধরে এলকাবাসীর সে দাবি শুধু আশ্বাসেই রয়ে গেছে। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুল্যান্স এবং গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারেনা সেতু না থাকায়। এ অবস্থায় তারা দুর্ভোগ নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়েই নদী পারাপার হতে হয়। গ্রামের স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়তে হয়।

তাঁরা আরো জানান, প্রতি বছর বর্ষায় নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢল নেমে বাঁশের সাঁকোটি একাধিকবার চলাচল অনুপোযোগি হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে সেটি মেরামত করেন। এভাবেই দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। অবশেষে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে এলাকার মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, একটি সেতুর অভাবে জয়চ-ীর ৪টি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এবং বাঁশের সাকো মেরামত করে চলাচল করছেন এমন বিষয়টি আমি জানতে পারি। মাননীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের পরামর্শক্রমে মিঠুপুর-আবুতালিবপুরসহ কুলাউড়ায় ১১টি এলাকায় সেতু নির্মাণের চাহিদা পাঠানো হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় একটি পাকা সেতুর চাহিদা দেওয়া হয় গুরুত্বসহকারে। এরই প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি পাকা সেতু ওই এলাকায় নির্মাণের অনুমোদন পেয়েছি। শিগগীরই সেতুর কাজ শুরু হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post