নিউজ ডেস্কঃ আবু তালেব। যাকে সবাই ল্যাংড়া তালেব হিসেবেই চেনে। সারা দেশে রয়েছে যার ব্যাপক পরিচিতি। তিনি গাড়ি চোর চক্রের গ্যাং লিডার। ল্যাংড়া তালেব গ্যাংয়ে দেশজুড়ে ৫ শতাধিক সদস্য রয়েছে। এই গ্যাং প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে। এসব গাড়ি তারা কৌশলে আবার টাকার বিনিময়ে মালিকে ফেরত দেয়। অনেকটা মুক্তিপণের মতো। এমন অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে চুরি অব্যাহত রেখেছিল ল্যাংড়া তালেব ও তাঁর গ্রুপের সদস্যরা।
সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসলে র্যাপিড এক্যাশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯) এক অভিযানে গাড়ি চোর চক্রের প্রধান আবু তালেব ও তার ৫ সহযোগীকে বিদেশী রিভলবার,গুলি মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ক্রাইম প্রিভেশন কোম্পানি-১ র্যাব-৯ সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার উবাহাটা গ্রামের মোঃ আব্দুল শহিদের পুত্র মোঃ আবু তালেব ওরফে ল্যাংড়া তালেব (৪৫), হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মিডাপুর গ্রামের মৃত আবুল হকের পুত্র ফজলু মিয়া (৫০), রজবপুর গ্রামের দরবেশ আলীর পুত্র ফজলু মিয়া (৩৫), বাহুবল উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার পুত্র ইব্রাহিম আহমেদ সুজন (২২), নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাও গ্রামের মৃত মায়া উদ্দিনের পুত্র বদরুজ্জামান (২৩) ও একই উপজেলার বুড়িনাও গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দিনের পুত্র সাইদ মিয়া (৩৫)।
গাড়ি চালকদের কাছে এক আতংকের নাম আবু তালেব ওরফে ল্যাংড়া তালেব। তার বিরুদ্ধে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন থানায় ১৪টিরও অধিক মামলা রয়েছে। বিষয়টি র্যাবের নজরে আসলে গতকাল (২০ এপ্রিল) বুধবার ভোরে শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজার এলাকা থেকে তালেবকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য মতে মাধবপুর থানা এলাকা থেকে ১ সিএনজিসহ ২ জন ও বাহুবল এবং মৌলভীবাজার সদর থানা থেকে ৩টি চোরাই সিএনজিসহ অন্য ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো জানান, আসামীদের কাছ থেকে ৪টি চোরাই সিএনজি, ১টি বিদেশী রিভালবার ও দুটি গুলি ও ৫ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য- ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর ল্যাংড়া তালেবকে চার সহযোগীসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন তার কাছ থেকে পাঁচটি চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়। ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান- ল্যাংড়া তালেবের সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গাড়ি চুরি করে আসছে। তারা আবার মালিককে টাকার বিনিময়ে ওই গাড়িটি ফেরতও দেয়। চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের আবু তালেব ওরফে ল্যাংড়া তালেব দেশব্যাপী তার সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। এ সিন্ডিকেটে ৫ শতাধিক সদস্য রয়েছে। তারা ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ১ হাজারেরও বেশি গাড়ি চুরি করে।