বিকল্প রেখে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা


অনলাইন ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার বিভাগের ১০৫ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। প্রায় প্রতিটি আসনে বিকল্প রেখে এ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে খালেদা জিয়ার মনোনয়নের চিঠি দেয়ার মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের কাছে মনোনয়নের চিঠি দেয়া শুরু করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুরুতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বগুড়া-৬ ও ৭ আসনের চিঠিটি জেলা সভাপতি ভিপি সাইফুলের হাতে তুলে দেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মহাসচিবসহ অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ সময় তিনি বলেন, প্রায় প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতা ছাড়া প্রায় প্রতিটি সংসদীয় আসনে আমরা দু’জনকে মনোনয়নের চিঠি দিচ্ছি। যাতে কোনো কারণে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেলে অন্যজন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।

বিএনপির মনোনয়ন তালিকায় এবার তরুণদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ আসনে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের সম্ভাব্য তালিকায় রাখা হয়েছে। এছাড়া কথিত সংস্কারপন্থীদের দলে ফিরিয়ে কয়েকজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। মনোনয়ন তালিকায় স্বামী-স্ত্রীও রয়েছেন। তারকাদের মধ্যে কনকচাঁপা, বেবী নাজনীনকে চিঠি দেয়া হয়।

মনোনয়নের চিঠি নিতে সোমবার সকাল থেকে গুলশান কার্যালয়ে ভিড় করেন নেতাকর্মীরা। মনোনয়নের চিঠি পেয়ে তারা বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এ নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে আমরা নেত্রীকে কারামুক্ত করতে চাই।

দুপুরে ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ গুলশান কার্যালয়ে আসেন। তিনি বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে রেদওয়ান জানান, তাদের তিনটি আসন নিশ্চিত করা হয়েছে। এগুলো হল- এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (চট্টগ্রাম-১৪), মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ (কুমিল্লা-৭), শাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১)।

শুরুতেই রংপুর বিভাগের প্রার্থীদের হাতে দলীয় প্রত্যয়নপত্র তুলে দেন বিএনপি নেতারা। এতে সই করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ১২টা) ঘোষণা চলছিল। গভীর রাত পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ভিড়ে উৎসবমুখর ছিল। মাইকে একেক প্রার্থীর নাম ঘোষণামাত্র মিছিল-স্লোগান দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা।

রংপুর বিভাগ : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ঠাকুরগাঁও-১)। রংপুর-১ মোকাররম হোসেন সুজন ও কামরুজ্জামান বাবু, রংপুর-২ ওয়াহিদুজ্জামান মামুন ও মোহাম্মদ আলী, রংপুর-৩ রিটা রহমান ও মোজাফফর আহমদ, রংপুর-৪ এমদাদুল হক ভরসা, আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা ও খলিলুর রহমান, রংপুর-৫ সোলায়মান আলম ও ডা. মমতাজ, রংপুর-৬ সাইফুল ইসলাম। আবুল হাসান কায়কোবাদ (কুড়িগ্রাম-১), আবু বকর সিদ্দিক (কুড়িগ্রাম-২), তাসভীরুল ইসলাম ও আবদুল খালেক (কুড়িগ্রাম-৩), আজিজুর রহমান ও মোকলেসুর রহমান (কুডিগ্রাম-৪), লালমনিরহাট-৩ আসাদুল হাবীব দুলু। মোশারফ রহমান (লালমনিরহাট-১)। দিনাজপুর-১ মঞ্জুরুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ, দিনাজপুর-২ সাদিক রিয়াজ পিনাক, দিনাজপুর-৩ সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, দিনাজপুর-৪ হাফিজুর রহমান ও আক্তারুজ্জামান মিয়া, দিনাজপুর-৫ এজেডএম রেজওয়ানুল হক ও জাকারিয়া বাচ্চু, দিনাজপুর-৬ লুৎফর রহমান মিন্টু ও শাহীনুর ইসলাম মণ্ডল। ন্যান্সি রহমান ও রফিকুল ইসলাম (নীলফামারী-১), বেবী নাজনীন ও আমজাদ হোসেন (নীলফামারী-৪)।

বরিশাল বিভাগ : বরিশাল বিভাগে মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন মতিউর রহমান তালুকদার ও নজরুল ইসলাম মোল্লা (বরগুনা-১) আসনে, নুরুল ইসলাম মনি (বরগুনা-২), আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আখতার চৌধুরী (পটুয়াখালী-১), শহীদুল আলম তালুকদার ও তার স্ত্রী সালমা আলম (পটুয়াখালী-২), হাসান মামুন ও মো. শাহজাহান (পটুয়াখালী-৩), এবিএম মোশাররফ হোসেন ও মনিরুজ্জামান মুনির (পটুয়াখালী-৪)। শাহজাহান ওমর (ঝালকাঠি-১), রফিকুল ইসলাম জামাল, ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো ও জেবা খান (ঝালকাঠি-২)। রুহুল আমিন দুলাল ও শাহজাহান মিয়া (পিরোজপুর-৩)। জহিরউদ্দিন স্বপন ও আবদুস সোবহান (বরিশাল-১), সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু ও শহিদুল হক জামাল (বরিশাল-২), জয়নুল আবেদীন ও সেলিমা রহমান (বরিশাল-৩), মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ ও রাজীব আহসান (বরিশাল-৪), মজিবর রহমান সারোয়ার ও এমাদুল হক চাঁন (বরিশাল-৫), আবুল হোসেন খান ও রশিদ খান (বরিশাল-৬)। ভোলা-২ আসনে হাফিজ ইব্রাহিম ও রফিকুল ইসলাম মনি, ভোলা-৩ আসনে মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও কামাল হোসেন, ভোলা-৪ আসনে নাজিমউদ্দিন আলম ও মো. নুরুল ইসলাম নয়ন। ভোলা-১ ও পিরোজপুর-১ আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। এ দুটি আসন জোটের শরিকদের দেয়া হবে। ভোলা-১ এ বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ও পিরোজপুর-১ এ জাপা (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে। এছাড়া পিরোজপুর-২ আসনটিও জোটকে দেয়া হতে পারে। তবে রাতে পিরোজপুর-১ এ ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনকে চিঠি দেয়া হয়।

রাজশাহী বিভাগ : খালেদা জিয়া (বগুড়া-৬ ও ৭), মো. আমিনুল হক (রাজশাহী ১), মিজানুর রহমান মিনু ও সাঈদ হাসান (রাজশাহী-২), একেএম মতিউর রহমান মন্টু ও শফিকুল হক মিলন (রাজশাহী-৩), মো. নাদিম মোস্তফা, মো. আবু হেনা, মো. নুরুজ্জামান খান মনির ও মো. আ. গফুর (রাজশাহী ৪), আবু সাঈদ চাঁদ ও মো. নুরুজ্জামান খান মানিক (রাজশাহী-৬)। ফয়সাল আলীম ও মো. ফজলুর রহমান (জয়পুরহাট-১), মো. খলিলুর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা (জয়পুরহাট-২)। ডা. সালেক চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান ও মাসুদ রানা (নওগাঁ-১), শামসুজ্জামান খান ও খাজা নজিব উল্লাহ চৌধুরী (নওগাঁ-২), রবিউল আলম বুলেট ও পারভেজ আরেফীন সিদ্দিকী (নওগাঁ-৩), শামসুল আলম প্রামাণিক ও একরামুল বারী দীপু (নওগাঁ-৪), জাহিদুল ইসলাম ও নজমুল হক সনি (নওগাঁ-৫), আলমগীর কবির ও শেখ রেজাউল ইসলাম রেজু (নওগাঁ-৬)। মো. শাহজাহান মিয়া ও বেলালী বাকী ইদ্রিসি (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১), বাইরুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), আবদুল ওয়াহেদ ও হারুনর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩)।

কনকচাঁপা ও নাজমুল হাসান রানা (সিরাজগঞ্জ-১), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদ (সিরাজগঞ্জ-২), আবদুল মান্নান তালুকদার ও আইনুল হক (সিরাজগঞ্জ-৩), সিরাজগঞ্জ-৪, জামায়াতকে দেয়া হবে। রকিবুল করিম খান পাপ্পু ও আমিরুল ইসলাম খান আলিম (সিরাজগঞ্জ-৫), কামরুদ্দিন ইয়াহিয়া খান মজলিশ ও এমএ মুহিত (সিরাজগঞ্জ-৬)। কামরুন্নাহার শিরিন ও তাইফুল ইসলাম টিপু (নাটোর-১), রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি (নাটোর-২), দাউদার মাহমুদ ও আনোয়ার ইসলাম আনু (নাটোর-৩), আবদুল আজিজ (নাটোর-৪)। একেএম সেলিম রেজা হাবিব (পাবনা-২)।

চট্টগ্রাম বিভাগ : নোয়াখালী ১ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মামুনুর রশিদ মামুন, নোয়াখালী-২ জয়নুল আবেদীন ফারুক ও জাফর ইকবাল, নোয়াখালী-৩ বরকত উল্লাহ বুলু, ডা. কাজী মাযহারুল ইসলাম, নোয়াখালী-৪ মোহাম্মদ শাহজাহান, মোসাম্মৎ শাহীনুর বেগম, নোয়াখালী ৫ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নোয়াখালী-৬ ফজলুল আজিম। কক্সবাজার-১ হাসিনা আহম্মেদ, কক্সবাজার-৩ লুৎফুর রহমান কাজল, কক্সবাজার-৪ মো. সালাহউদ্দিন ও শাজাহান চৌধুরী। বান্দরবান সাচিং প্রু জেরি, উম্মে কুলসুম সুলতানা, রাঙ্গামাটি দীপেন দেওয়ান ও মনি স্বপন দেওয়ান, খাগড়াছড়ি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া।

Post a Comment

Previous Post Next Post