রিমন হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার জনতা

'তারা শুধু রিমনকে হত্যা করেনি হত্যা করেছে আমার পুরো পরিবারকে'

রিমন হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার জনতা
স্টাফ রিপোর্টারঃ কুলাউড়ায় পানচাষী রিমন হত্যার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও ঘটনার সাথে কাউকে গ্রেফতার করতে না পারায় জনমনে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ। উল্টো মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে একটি মহল। একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। এদিকে রিমন হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাঙ্গিছড়া বাজারে বুধবার রাতে বিশাল প্রতিবাদ সভা করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে জানা গেছে, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের গুতগুতি গ্রামের এলাইছ মিয়ার ছেলে রিমন মিয়া (৩২) কর্মধা ইউনিয়নের মা-মনি পুঞ্জির একটি জুমে পান চাষ করতো। প্রতিদিন রাতে তিনি কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ওই পান জুম পাহারা দিতেন। ৫ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রিমন বাড়ি থেকে বের হয়ে জুমে যান। পরদিন সোমবার সকালে মেঘাটিলা ও নিউ রাঙ্গি পানপুঞ্জির সংলগ্ন দেওছড়ার পাশে পথচারীরা একটি ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা রিমনের লাশ শনাক্ত করে। ময়না তদন্ত শেষে ওইদিন বিকেলে স্থানীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

রিমনের বৃদ্ধ পিতা এলাইছ মিয়া জানান, রিমন আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। পানজুমের আয় দিয়ে সংসার চলতো। তাকে পাষ-রা কতো নির্মমভাবে হত্যা করেছে তা বলে বুঝাতে পারবনা। তার শরীরে রয়েছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন । তারা শুধু রিমনকে হত্যা করেনি হত্যা করেছে আমার পুরো পরিবারকে।

স্ত্রী সালমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মাদ্রাসা ও স্কুল পড়–য়া দুটি সন্তানের কি হবে? আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আমার মতো আর কাউকে অল্প বয়সে বিধবা হতে না হয়।

 
রিমন হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার জনতা
এদিকে বুধবার (৮ফেব্রুয়ারি) রাতে রাঙ্গিছড়া বাজারে ঐক্যবদ্ধ এলাকাবাসীর ব্যানারে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুলাউড়ার সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে এবং যুবলীগ নেতা জুনাব আলীর পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কর্মধা ইউপির চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম ও হাবিবুর রহমান আসুক, প্রবীন মুরব্বি আসুক আহমদ কলা মিয়া, সদর ইউপি সদস্য মো. রফিউল্লাহ, কর্মধা ইউপি সদস্য মুহিব আহমদ, শিক্ষক মুমিনুল ইসলাম জাবেদ, রাঙ্গিছড়াবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুশন মিয়া, নিহত রিমনের পিতা এলাইছ মিয়া প্রমুখ। কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, নিহতের গায়ে ও মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এ ব্যাপারে রিমনের পিতা বাদি হয়ে আমুলি পান পুঞ্জির হেডম্যান প্রত্যুষ আসাক্রাকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা (নং-৪) দায়ের করেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post