শহীদুল ইসলাম তনয়:
চট করে বলা যায় ভালো একজন মানুষ ছিলো চয়ন। জন্ম ১৯৮১, মৃত্যু ২০১৬। খুব স্বল্প সময়। জন্মের সময় থেকেই চয়ন হৃদয়ের অসুখে ভুগছিলো। অনেকেই হয়তো জানতো ব্যাপারটা। কিন্তু চয়ন কোন দিনও কাউকে বলেনি তার অসুখের কথা। যতটুকু সময় পেয়েছে ততটুকুই সে কাজে লাগিয়েছে সমাজের জন্য। হৃদয়ের অসুখটা তাকে হয়তো থামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু দমাতে পারেনি কখনও। সেই লাল ইশতেহার থেকে শুরু, তারপর প্রথম আলো বন্ধুসভা, জিয়নকাঠি সাহিত্য সংসদ, পরিশেষে সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকার ষড়জ নামের সাহিত্য পাতার সম্পাদক... যখন যে দায়িত্ব পেয়েছিলো সে, যথাযথভাবে তা পালন করে গেছে। একটা কাজের সাথে আরেকটা কাজের যেন গুলিয়ে না ফেলে সে জন্য সে দায়িত্ব বেশি নিতে চাইতো না। যতটুকু পারবে ঠিক ততটুকুর জন্যই সে হ্যাঁ বলতো। এই সিদ্ধান্তের জন্যই ওর কাজগুলো হতো চমৎকার। যার সর্বশেষ প্রমাণ সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকার ষড়জ নামের সাহিত্য পাতা।
য়-টা আমার নামের মাঝখানে আর আপনার শেষে। আর ‘ন’ টা আপনার নামের মাঝের অক্ষর আর আমার শেষে। তনয় ভাই খেয়াল করেছেন বলেই একদিন হো হো করে হেসে উঠেছিলো চয়ন। এমনই প্রাণবন্ত ছিলো আমাদের চয়ন জামান। শুধু মানুষ হিসেবে প্রাণবন্ত নয় সংগঠক, কবি, লেখক, সাংবাদিক হিসেবেও সে ছিলো প্রাণবন্ত, যেন দুরন্ত এক প্রজাপতি। ক্ষুরধার লেখনী, প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা, স্পষ্টভাষী বন্ধুসুলভ আচরণের কারণে এই প্রাণবন্ত মানুষটি খুব স্বল্প সময়ে ঠাঁই করে নিয়েছিলো সর্বমহলে। তাই লিখতে দ্বিধা নেই সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কুলাউড়া ইউনিটের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, দৈনিক যুগভেরীর স্টাফ রিপোর্টার, সব্যসাচী লেখক, কবি ও মেধাবী সাংবাদিক অমরুজ্জামান চৌধুরী চয়ন জামানের আকর্ষিক মৃত্যু শুধু তার পরিবারকে কাঁদায়নি, কাঁদিয়েছে বৃহত্তর কুলাউড়া বাসীর অনেককেই...
নমস্কার স্যার। কেমন আছেন? এই আদুরে মাখা কণ্ঠে আর কোনদিন চয়ন ডাকবে না এই কথা মনে করে একটি স্মরণ শোক সভায় কেঁদেছিলেন আমাদেরই পরম শ্রদ্ধাভাজন এক শিক্ষক। সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকা আয়োজিত স্মরণ শোক সভা ও দোয়া মাহফিলে শুধু সেই স্যার নন, কেউ-ই আটকাতে পারেনি চোখের জল। সেই দিন কথা বলতে গিয়ে কেঁদেছিলাম আমিও। ওর সাথে কাটানো অনেক ক্ষণ, শেষ দেখার কথা মনে করে। তার খুব তাড়া ছিলো সেই রাত্রে। দাঁড়িয়েছিলো কর্মস্থল অফিসের ঠিক সামনে। দেখা হওয়ার পর কুশলাদি বিনিময়, তারপর বললো রিক্সাওয়ালার জন্য অপেক্ষা করছি। ১০ মিনিট ৫ মিনিট করে করে সেই রিক্সাওয়ালা আসছিলোনা দেখে চয়ন খুব ক্ষেপেছিলো। রিক্সাওয়ালার কান্ডজ্ঞানহীনতার জন্য। কত কিছু সে বললো। অথচ রিক্সাওয়ালা আসার পর কিছুই বললো না। রিক্সায় চেপে বসে বিদায় নিলো। তার একদিন পরই শুনি সব শেষ। ২১ অক্টোবর শুক্রবার ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরকালের জন্য চলে গেছে সে না ফেরার দেশে।
জানার তীব্র আকাক্সক্ষা ছিলো চয়ন জামানের মধ্যে। চয়ন জামান তার সারা জীবনের সমস্ত কর্মপ্রবাহে এই আকাক্সক্ষা নিয়েই কাজ করে গেছে। অসম্ভব পড়–য়া এই মানুষটি নিজেকে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছিলো অমিত সম্ভাবনাময় একজন লেখক ও প্রতিভাবান সংবাদকর্মী হিসেবে। অনেক কিছুই জেনেছে সে। কিন্তু জানতে পারেনি একটা বিষয়। পারবেও না। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা এটিএম নাইমুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বড় ভাই শরীফুজ্জামান চৌধুরী স্বপন ও সলিমুজ্জামান চৌধুরী সুমন সহ ৪ বোন, মা ও স্ত্রী সহ অসংখ্যা আত্মীয় স্বজন, সহপাঠী ও গুণগ্রাহী ছাড়াও রেখে গেছে আরো কিছু মানুষ। যারা বেঁচে থাকা অবধি স্মরণ করবে চয়ন জামানকে। লিখে ফেলবে ‘কৃষ্ণচূড়ার দিন কবিতা আসবে না আর’, ‘মায়া ভালোবাসা আপাত ভাবনা’ শিরোনামের কবিতা গুলো। কেউ কেউ তাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার মতো চোখ ভাসাবে জলে। চয়ন জামানের জানাজার নামাজে ঘাগটিয়া শাহী ঈদগাহ মাঠে কানায় কানায় ভরা মানুষে। কেউ একজন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে করতে এক বুক হাহাকার নিয়ে উপরের খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো। জানবে না চয়ন জামান তুমি আর জানতে পারবে না। ঠিক তেমনি আরেকজন যিনি তোমাকে আগলে রেখেছিলেন পরম স্নেহে, তিনি ঠিকই তোমাকে খোঁজবেন সব সময় সেই একই পরম স্নেহে অফিসের সর্বত্র... চয়নিকার ভাঁজে ভাঁজে...
মাথা পেতে নেওয়ার অদ্ভুত এক ক্ষমতাও ছিলো চয়নের। কত অভিযোগ করতাম, চয়ন এবারের ষড়জটা ভালো হয়নি, আরেকটু মনোযোগ দাও, পাতায় বানান ভুল থাকে প্রচুর, ষড়জে কেন কুলাউড়ার বাইরের লেখকদের লেখা বেশি থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। সবকিছু হাসি মুখে মাথা পেতে দায় স্বীকার করে নিতো সে। কখনো যুক্তি দিয়ে বুঝাতো ষড়জের মানের ব্যাপারে আপোষহীনতার জন্য তার অবস্থানটুকু, কখনো শরীর খারাপের জন্য মনোযোগ দিতে পারেনি তাই হয়তো ভুলগুলো হতো। আবার হাসিমুখে শপথ ও করতো আর হবে না... আর এভাবে অভিযোগের সুযোগ-ই দিবে না সে... মানুষ চলে যায় থেকে যায় অনেক কিছু, অনেক স্মৃতি। চয়নের সাথে দেখা হলেই প্রায়ই বলতাম একটি কথা। চয়ন, কাজ করো ভাই, কুলাউড়ার লেখালেখি অঙ্গনে ছিলো আছে থাকবে অনেকেই। কিন্তু হারাধনের রইল বাকি তিন আমি, সঞ্জয় আর তুমি (তিনটি স্থানীয় পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক) আমরা হাল ছাড়লে কুলাউড়ার সাহিত্য এত সুন্দরভাবে তিনটি জায়গায় ফুটে উঠবে না। চয়ন হাল ছাড়েনি, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করেছে। আমাদের যুদ্ধ চলছে, চলবে... চয়ন তোমার এই শূন্যতাকে সঙ্গী করে।
নভেম্বর (২০১৬) কোন এক দুপুরে সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ হাতে নিয়ে চোখ বুলাতে বুলাতে একটি জায়গায় চোখ আটকে গেলো। চয়ন স্মরণে সেই সংখ্যায় একটি কবিতা ছাপা হয়েছিলো। লিখেছিলো কুলাউড়ার কবি রাসেল আব্দুল্লাহ। সে কবিতার শেষের কয়েকটা লাইন পড়ে সেদিন আমি কেঁদেছিলাম সেই সময়। লাইনগুলো ছিলো-
তোমাকে খুব ডাকছে বন্ধু
তোমার জন্য কাঁদছে দেখো
কুলাউড়ার আকাশ...
মনমরা মানুষের মিছিলে মেঘলা দীর্ঘ শ্বাস।
ভালো থেকো স্নেহভাজন বন্ধু। ভালো থেকো একজন সদালাপী হাস্যোজ্জ্বল সাহিত্য মোদী ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ উদীয়মান একজন আলোকিত মানুষ একজন চয়ন জামান। মৃত্যুকালে যার বয়স হয়েছিলো মাত্র ছয়ত্রিশ!
চট করে বলা যায় ভালো একজন মানুষ ছিলো চয়ন। জন্ম ১৯৮১, মৃত্যু ২০১৬। খুব স্বল্প সময়। জন্মের সময় থেকেই চয়ন হৃদয়ের অসুখে ভুগছিলো। অনেকেই হয়তো জানতো ব্যাপারটা। কিন্তু চয়ন কোন দিনও কাউকে বলেনি তার অসুখের কথা। যতটুকু সময় পেয়েছে ততটুকুই সে কাজে লাগিয়েছে সমাজের জন্য। হৃদয়ের অসুখটা তাকে হয়তো থামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু দমাতে পারেনি কখনও। সেই লাল ইশতেহার থেকে শুরু, তারপর প্রথম আলো বন্ধুসভা, জিয়নকাঠি সাহিত্য সংসদ, পরিশেষে সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকার ষড়জ নামের সাহিত্য পাতার সম্পাদক... যখন যে দায়িত্ব পেয়েছিলো সে, যথাযথভাবে তা পালন করে গেছে। একটা কাজের সাথে আরেকটা কাজের যেন গুলিয়ে না ফেলে সে জন্য সে দায়িত্ব বেশি নিতে চাইতো না। যতটুকু পারবে ঠিক ততটুকুর জন্যই সে হ্যাঁ বলতো। এই সিদ্ধান্তের জন্যই ওর কাজগুলো হতো চমৎকার। যার সর্বশেষ প্রমাণ সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকার ষড়জ নামের সাহিত্য পাতা।
য়-টা আমার নামের মাঝখানে আর আপনার শেষে। আর ‘ন’ টা আপনার নামের মাঝের অক্ষর আর আমার শেষে। তনয় ভাই খেয়াল করেছেন বলেই একদিন হো হো করে হেসে উঠেছিলো চয়ন। এমনই প্রাণবন্ত ছিলো আমাদের চয়ন জামান। শুধু মানুষ হিসেবে প্রাণবন্ত নয় সংগঠক, কবি, লেখক, সাংবাদিক হিসেবেও সে ছিলো প্রাণবন্ত, যেন দুরন্ত এক প্রজাপতি। ক্ষুরধার লেখনী, প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা, স্পষ্টভাষী বন্ধুসুলভ আচরণের কারণে এই প্রাণবন্ত মানুষটি খুব স্বল্প সময়ে ঠাঁই করে নিয়েছিলো সর্বমহলে। তাই লিখতে দ্বিধা নেই সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কুলাউড়া ইউনিটের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, দৈনিক যুগভেরীর স্টাফ রিপোর্টার, সব্যসাচী লেখক, কবি ও মেধাবী সাংবাদিক অমরুজ্জামান চৌধুরী চয়ন জামানের আকর্ষিক মৃত্যু শুধু তার পরিবারকে কাঁদায়নি, কাঁদিয়েছে বৃহত্তর কুলাউড়া বাসীর অনেককেই...
নমস্কার স্যার। কেমন আছেন? এই আদুরে মাখা কণ্ঠে আর কোনদিন চয়ন ডাকবে না এই কথা মনে করে একটি স্মরণ শোক সভায় কেঁদেছিলেন আমাদেরই পরম শ্রদ্ধাভাজন এক শিক্ষক। সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ পত্রিকা আয়োজিত স্মরণ শোক সভা ও দোয়া মাহফিলে শুধু সেই স্যার নন, কেউ-ই আটকাতে পারেনি চোখের জল। সেই দিন কথা বলতে গিয়ে কেঁদেছিলাম আমিও। ওর সাথে কাটানো অনেক ক্ষণ, শেষ দেখার কথা মনে করে। তার খুব তাড়া ছিলো সেই রাত্রে। দাঁড়িয়েছিলো কর্মস্থল অফিসের ঠিক সামনে। দেখা হওয়ার পর কুশলাদি বিনিময়, তারপর বললো রিক্সাওয়ালার জন্য অপেক্ষা করছি। ১০ মিনিট ৫ মিনিট করে করে সেই রিক্সাওয়ালা আসছিলোনা দেখে চয়ন খুব ক্ষেপেছিলো। রিক্সাওয়ালার কান্ডজ্ঞানহীনতার জন্য। কত কিছু সে বললো। অথচ রিক্সাওয়ালা আসার পর কিছুই বললো না। রিক্সায় চেপে বসে বিদায় নিলো। তার একদিন পরই শুনি সব শেষ। ২১ অক্টোবর শুক্রবার ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরকালের জন্য চলে গেছে সে না ফেরার দেশে।
জানার তীব্র আকাক্সক্ষা ছিলো চয়ন জামানের মধ্যে। চয়ন জামান তার সারা জীবনের সমস্ত কর্মপ্রবাহে এই আকাক্সক্ষা নিয়েই কাজ করে গেছে। অসম্ভব পড়–য়া এই মানুষটি নিজেকে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছিলো অমিত সম্ভাবনাময় একজন লেখক ও প্রতিভাবান সংবাদকর্মী হিসেবে। অনেক কিছুই জেনেছে সে। কিন্তু জানতে পারেনি একটা বিষয়। পারবেও না। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা এটিএম নাইমুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বড় ভাই শরীফুজ্জামান চৌধুরী স্বপন ও সলিমুজ্জামান চৌধুরী সুমন সহ ৪ বোন, মা ও স্ত্রী সহ অসংখ্যা আত্মীয় স্বজন, সহপাঠী ও গুণগ্রাহী ছাড়াও রেখে গেছে আরো কিছু মানুষ। যারা বেঁচে থাকা অবধি স্মরণ করবে চয়ন জামানকে। লিখে ফেলবে ‘কৃষ্ণচূড়ার দিন কবিতা আসবে না আর’, ‘মায়া ভালোবাসা আপাত ভাবনা’ শিরোনামের কবিতা গুলো। কেউ কেউ তাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার মতো চোখ ভাসাবে জলে। চয়ন জামানের জানাজার নামাজে ঘাগটিয়া শাহী ঈদগাহ মাঠে কানায় কানায় ভরা মানুষে। কেউ একজন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে করতে এক বুক হাহাকার নিয়ে উপরের খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো। জানবে না চয়ন জামান তুমি আর জানতে পারবে না। ঠিক তেমনি আরেকজন যিনি তোমাকে আগলে রেখেছিলেন পরম স্নেহে, তিনি ঠিকই তোমাকে খোঁজবেন সব সময় সেই একই পরম স্নেহে অফিসের সর্বত্র... চয়নিকার ভাঁজে ভাঁজে...
মাথা পেতে নেওয়ার অদ্ভুত এক ক্ষমতাও ছিলো চয়নের। কত অভিযোগ করতাম, চয়ন এবারের ষড়জটা ভালো হয়নি, আরেকটু মনোযোগ দাও, পাতায় বানান ভুল থাকে প্রচুর, ষড়জে কেন কুলাউড়ার বাইরের লেখকদের লেখা বেশি থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। সবকিছু হাসি মুখে মাথা পেতে দায় স্বীকার করে নিতো সে। কখনো যুক্তি দিয়ে বুঝাতো ষড়জের মানের ব্যাপারে আপোষহীনতার জন্য তার অবস্থানটুকু, কখনো শরীর খারাপের জন্য মনোযোগ দিতে পারেনি তাই হয়তো ভুলগুলো হতো। আবার হাসিমুখে শপথ ও করতো আর হবে না... আর এভাবে অভিযোগের সুযোগ-ই দিবে না সে... মানুষ চলে যায় থেকে যায় অনেক কিছু, অনেক স্মৃতি। চয়নের সাথে দেখা হলেই প্রায়ই বলতাম একটি কথা। চয়ন, কাজ করো ভাই, কুলাউড়ার লেখালেখি অঙ্গনে ছিলো আছে থাকবে অনেকেই। কিন্তু হারাধনের রইল বাকি তিন আমি, সঞ্জয় আর তুমি (তিনটি স্থানীয় পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক) আমরা হাল ছাড়লে কুলাউড়ার সাহিত্য এত সুন্দরভাবে তিনটি জায়গায় ফুটে উঠবে না। চয়ন হাল ছাড়েনি, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করেছে। আমাদের যুদ্ধ চলছে, চলবে... চয়ন তোমার এই শূন্যতাকে সঙ্গী করে।
নভেম্বর (২০১৬) কোন এক দুপুরে সাপ্তাহিক কুলাউড়ার সংলাপ হাতে নিয়ে চোখ বুলাতে বুলাতে একটি জায়গায় চোখ আটকে গেলো। চয়ন স্মরণে সেই সংখ্যায় একটি কবিতা ছাপা হয়েছিলো। লিখেছিলো কুলাউড়ার কবি রাসেল আব্দুল্লাহ। সে কবিতার শেষের কয়েকটা লাইন পড়ে সেদিন আমি কেঁদেছিলাম সেই সময়। লাইনগুলো ছিলো-
তোমাকে খুব ডাকছে বন্ধু
তোমার জন্য কাঁদছে দেখো
কুলাউড়ার আকাশ...
মনমরা মানুষের মিছিলে মেঘলা দীর্ঘ শ্বাস।
ভালো থেকো স্নেহভাজন বন্ধু। ভালো থেকো একজন সদালাপী হাস্যোজ্জ্বল সাহিত্য মোদী ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ উদীয়মান একজন আলোকিত মানুষ একজন চয়ন জামান। মৃত্যুকালে যার বয়স হয়েছিলো মাত্র ছয়ত্রিশ!