স্পোর্টস ডেস্কঃ মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ম্যাচ। আলাভেসের মাঠে গোলের বান ছুটিয়েছে বার্সেলোনা। মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার তিনজনই গোল পেয়েছেন, তাতে ৬-০ গোলে ম্যাচ জিতেছে বার্সা।
ঘণ্টা চারেক পর ওসাসুনার মাঠে রিয়াল মাদ্রিদ গোল করেছে তার অর্ধেক। জিতেছে ৩-১ গোলে, তবে এই স্কোরলাইন আসল ছবিটা বলে না। অনেক ঘাম ঝরিয়েই জিতেছে রিয়াল।
পারফরম্যান্সে দুই দলের পার্থক্য থাকলেও পরশু রাতে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের দুটি ম্যাচ মিলে গেছে একই বিন্দুতে। দুটি ম্যাচই ভয়ংকর দুই চোটের সাক্ষী। অ্যাঙ্কেলের চোট পাওয়ায় বার্সেলোনার অ্যালেক্স ভিদালের এই মৌসুমটাই শেষ হয়ে গেছে। তবে রিয়ালের ম্যাচে ওসাসুনা ডিফেন্ডার তানো বোনিনের ডান পায়ের টিবিয়া-ফিবুলা ভেঙে গেছে। রিয়াল ডিফেন্ডার দানিলোও আঘাত পেয়ে ছেড়েছেন মাঠ।
চোট-জর্জর দিনটিতে মাঠের খেলায় বেশি উজ্জ্বল ছিল বার্সেলোনাই। ২৭ মে এই আলাভেসের সঙ্গেই বার্সেলোনা কোপা ডেল রের ফাইনাল খেলবে বলে ম্যাচটা এমনিতেই ছিল আলোচনায়। বাড়তি নাটকীয়তা আনে ম্যাচের আগে দুই দলের সমর্থকদের দাঙ্গা। কিন্তু মাঠে মেসি-সুয়ারেজরা আর নাটকীয়তা রাখলেন কই! ৩৬ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে ভাঙল আলাভেস-বাঁধ, প্রথমার্ধে তাতে যোগ দেন শুধু নেইমার। দ্বিতীয়ার্ধে ‘এমএসএনে’র অন্য রত্ন মেসিকে দিয়ে গোল-উৎসবের শুরু। সুয়ারেজ-রাকিটিচ তো ছিলেনই, আত্মঘাতী গোল করে সেই উৎসবে পূর্ণতা এনেছেন আলাভেস ডিফেন্ডার অ্যালেক্সও।
তবে নিজের দলের ‘অ্যালেক্স’, অর্থাৎ ভিদালের চোটই ম্যাচের পর খুশি থাকতে দেয়নি বার্সা কোচ লুইস এনরিকেকে, ‘ম্যাচের দিক থেকে আমি খুশি মনেই ফিরছি। যে ফল পেয়েছি, এবং সেটি যেভাবে এসেছে, দুটির জন্যই। তবে অ্যালেক্সের চোটের কারণে খারাপ লাগছে। দলের কোনো একজনকে গুরুতর চোটে পড়ে এভাবে কাতরাতে দেখা বাজে অভিজ্ঞতা।’
এদিকে রিয়াল-ওসাসুনা ম্যাচের প্রথমার্ধে ইসকোকে ট্যাকল করতে গিয়ে বেঁকেই যায় ওসাসুনা ডিফেন্ডার তানোর পা। দুই দলের খেলোয়াড়েরাই যেন হতবিহ্বল হয়ে পড়েন এতে। সেটি সামলে উঠে রিয়ালই ম্যাচে এগিয়ে যায় আগে, ২৪ মিনিটে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোলে। অবশ্য ৯ মিনিট পরই ওসাসুনা সমতায় ফেরে দুর্দান্ত সার্জিও লিওনের গোলে। প্রথমার্ধে ৩-৫-২ ফর্মেশনে খেলা রিয়াল মাদ্রিদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছিল বরং ওসাসুনাই।
দ্বিতীয়ার্ধে অবস্থাটা বদলের পেছনেও পরোক্ষভাবে হাত আছে এক চোটের—রিয়াল ডিফেন্ডার দানিলোর। ৫৭ মিনিটে রিয়াল ডিফেন্ডার চোট পাওয়ায় তাঁর জায়গায় কোচ জিদান মাঠে নামান হামেস রদ্রিগেজকে। তাতে ৪-২-৩-১ ছকে ফিরে যাওয়া রিয়াল ম্যাচে নিয়ন্ত্রণও ফিরে পায়। গোল দুটিও আসে এরপর। ৬২ মিনিটে ইসকো গোল করে দলকে দ্বিতীয়বার এগিয়ে দেন, যোগ করা সময়ে জয় নিশ্চিত হয় লুকাস ভাসকেজের গোলে।
পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা ওসাসুনার বিপক্ষে জিতলেও অবশ্য দলের পারফরম্যান্সে খুশি নন জিদান, ‘দুই দলের মধ্যে পয়েন্টের যে পার্থক্য সেটি মাঠে বোঝা যায়নি। আর প্রতিপক্ষও মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলার সময় চেষ্টা করে যতটা সম্ভব পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে। আমাদের ভুগতে হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত যেটির জন্য এসেছি তা পেয়েছি।’
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি