চয়ন জামান আবহমান এক আলোর দ্বীপ

চয়ন জামান আবহমান এক আলোর দ্বীপ
আবু সাদেক আব্দুল্লাহঃ চয়ন জামান, শৈশব থেকেই যাকে চিনি। এনসি স্কুলের খেলার মাঠে কিংবা তার গ্রামের বাড়ির দিঘীরপাশে সবুজ পথে, কখনো বন্ধু বান্ধব কিংবা কখনো একাগ্র মনে খেলাধুলায় মগ্ন। বই এর প্রতি ছিল প্রচ- ঝোঁক এবং ক্রমশ হয়ে ওঠলো একজন লিখিয়ে। মফস্বল শহরে থেকেও লিখলে লিখার মধ্যে ছিল এক সর্বজনীন আবেদন। শারীরিক অসামর্থ্য কখনো তার বিশ্ব চিন্তা ভাবনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি। প্রগতিশীল চিন্তা আর মননের এক র্নিভরযোগ্য বাহক ছিল সে। সমাজে যখন সমষ্টির চেয়ে ব্যক্তির চাওয়া পাওয়া প্রাধান্য হয়ে ওঠলো চয়ন নিজেকে সে স্রোতে ভাসিয়ে দেয়নি। নিজস্ব চাওয়া পাওয়া দুঃখ দুর্দশা, শারীরিক ও সমস্ত কিছুকে তাঁর সাহিত্য ভাবনা কিংবা চিন্তা চেতনায় ভাসিয়ে দিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তা কিংবা জনমানুষকে সে আবেগ দ্বারা বশীভূত করেনি। ভাবনা ছিলো বিশ্বমানবতাকে নিয়ে যেখানে সহকারী ছিলো তার মনন। তার প্রগতিশীল চিন্তা চেতনা কখনো নিজের দুরারোগ্য ব্যধির মাধ্যমে কাউকে আবেগ দ্বারা বশীভূত করেনি। সৃষ্টিশীল ভাবনা আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যা কুলাউড়াকে এক মর্যাদার আসনে বসিয়েছে তারই এক সমজদার ছিলো চয়ন। নিজে লিখেছে অন্যদেরও লিখিয়ে হবার অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
কাজ করেছে বেতনে- বিনা বেতনে কিংবা অর্ধবেতনে। কিন্তু তাতে কখনো বিরূপ মনোভাব আসেনি। কুলাউড়ার আনাচে-কানাচে আর পথে প্রান্তরের খবর আর জনমানবের  চিত্র, তার কলমের স্পর্শে স্পন্দিত  ছিলো। সমাজে দুঃখ দুর্দশা, হতাশা এবং চাওয়া পাওয়ার চিত্র তুলে ধরেছেন। আর এসব কিছুর মধ্যে এরই মধ্যে সে তার এক ক্ষুদ্র জীবনকে করে তুলেছেন অর্থবহ এবং মহিমান্বিত। হঠাৎ রাস্তায় কখনো আর দেখা হবে না চয়ন জামানের সাথে, আরও হয়তো বলেবে না সাদেক ভাই আমার এই বইটা দরকার, কিংবা এই সাহিত্য পত্রটি। তার প্রগতিশীল মননের ধারক ও বাহকদের জীবনপথে হয়তো বা একটুখানি থামতে হবে কারণ চয়ন জামানের ক্ষুদ্র জীবনের  বড় এক পরিসর ছিলো এসব কিছুর ধ্যান ও চিন্তা চেতনায়। চয়ন জামান কুলাউড়া’র লাল নীল দীপাবলীর অনন্য এক আলো জ্বেলেছেন। আলোকিত করেছে স্বীয় কুলাউড়াকে। চয়ন জামান আমার, আমাদের সকলের।
আবু সাদেক আব্দুল্লাহ: এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।

Post a Comment

Previous Post Next Post