এম. এ. কাইয়ুমঃ দীর্ঘ ২৫ দিন পর চিঠিটি পৌঁছাল প্রাপকের হাতে। কিন্তু স্থানীয় ডাক বিভাগের কাছ থেকে ওই চিঠি পেয়ে হতবাক প্রাপক। কারণ তার নিয়োগ পরীক্ষার সময় যে ৩ দিন আগেই চলে গেছে। ডাক বিভাগের এমন কচ্ছপ গতির ‘সেবায়’ হতাশাগ্রস্ত ওই যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নে। ওই দুর্ভাগা যুবক পালকীছড়া চা বাগানের শ্রমিক ঘরসাম কৈরীর সন্তান রাম বচন কৈরী। এই খবরটি চাউর হলে ডাক বিভাগের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তারা ডিজিটাল যুগে ডাক বিভাগের এমন এনালগ সেবার মান ও ধরন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাম বচন কৈরী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ শিক্ষা বর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম এ পাস করেন। তিনি পালকীছড়া চা বাগানের চা শ্রমিক সন্তানদের মধ্যে প্রথম এম পাস ছাত্র। তিনি জানান, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) অধীনে উচ্চমান সহকারী পদে তিনি আবেদন করেছিলেন সেপ্টেম্বর মাসে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করায় তিনি অপেক্ষায় ছিলেন পরীক্ষার প্রবেশ পত্রের। আবেদন করার পর প্রায়ই খোঁজও নিতেন স্থানীয় ডাক বিভাগে। কিন্তু যে দিন তিনি প্রবেশপত্রের চিঠিটি হাতে পেলেন এর ৩ দিন আগেই সম্পন্ন হয় তার সেই কাঙ্ক্ষিত চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা। প্রাপ্ত প্রবেশপত্র অনুযায়ী তার নিয়োগ পরীক্ষা ছিল ২রা ডিসেম্বর ঢাকার শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে, আর তার কাছে ডাকযোগে প্রবেশপত্রটি এসে পৌঁছায় ৫ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। রাম বচন বলেন, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে হয়তো উত্তীর্ণ হতে পারতাম। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির পাশাপাশি আমার কোটা ছিল। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষার তিন দিন পর প্রবেশপত্র আসার এ দায় কে নেবে?
শমশেরনগর উপ-ডাক ঘরের সহকারী মাস্টার (অপারেটর) কৃষ্ণা রানী চন্দ্র জানান, ৫ ডিসেম্বর ডাকটি গ্রহণ করে সেদিনই প্রাপকের কাছে সেটি পৌঁছে দিয়েছেন। চিঠিটি আসতে কেন বিলম্ব হলো তা তার জানা নেই।